এপ্রিল ২৯, ২০২৪

লক্ষ্মীপুর নিউজ

দিন বদলের প্রত্যয়ে

একজন আদর্শ শিক্ষক আলতাফ হোসেন মাষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায়  একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত তেরয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের কৃতি সন্তান আলতাফ হোসেন মাষ্টার । দীর্ঘ দুই যুগের চাকুরী জীবনে কখনো দায়িত্বের প্রতি অবহেলা করেননি। সঠিক পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দিচ্ছেন অত্যাধুনিক শিক্ষা । দীর্ঘসময় ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থেকে বিদ্যালয়ের পরিবেশকে মনোরম করে রেখেছেন এই শিক্ষক । সরকার যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত করার উদ্যেগ নিয়েছেন তারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে স্মার্টের ছোঁয়া পড়বে এটাই স্বাভাবিক । ঠিক তেমনি প্রাথমিক থেকে শুরুটা হলে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি সহজ হবে । তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকার বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধার আওতায় এনেছেন । এমনকি বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীর পরীক্ষার ফিস , পরীক্ষার কাগজও নিতে হয়না । আলতাফ হোসেন মাষ্টার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নিজের বিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের স্মার্ট করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সফলও হয়েছেন । প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সাজিয়েছেন শিশুদের মনের মত করে । অত্যান্ত নম্র ভদ্র এই শিক্ষক সকাল ৯ টায় বিদ্যালয়ে এসে করেন অফিসের কাজ আবার ক্লাশের সময় ছুটে যান শ্রেনী কক্ষে এভাবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত অবিরাম ছুটে চলতে থাকেন । কারন তিনি মনে করেন শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড । আর জাতির মেরুদন্ডকে শক্ত করতে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিহার্য্য। যে শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে সঠিক শিক্ষা অর্জন করবে সেই শিক্ষার্থী আগামীর দেশ এবং জাতিকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে তুলতে সহযোগীতা করবে । তাই প্রাথমিক শিক্ষার কোন বিকল্প নেই । কে এই আদর্শ শিক্ষক আলতাফ হোসেন মাষ্টার ? আলতাফ হোসেন এর জন্ম উপকুলীয় অঞ্চল লক্ষীপুর  জেলার সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ০৩ নং ওয়ার্ডের বিনোধ ধর্মপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতার নাম হাফিজ উল্যাহ । পিতা হাফিজ উল্যাহও এলাকায় একজন স্বজ্জন ব্যাক্তি । ছোট বেলা থেকে আলতাফ হোসেন ছিলেন একজন দুরন্ত, মেধাবী ছেলে । ছাত্রজীবনে লেখাপড়ায় ছিলেন খুব ভালো । নিজের লক্ষ্য অনুযায়ী হলেন জাতি গড়ার কারিগর । নিজ গ্রামের হোসেনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে একই এলাকার হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সালে এসএসসি পাশ করেন । পরবর্তিতে ১৯৯২ সালে লক্ষী পুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৯৪ সালে একই কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন কম্পিøট করেন । তার পরবর্তিতে ২০০০ সালে চাকুরী জীবনে যাত্রা শুরু করেন । নিজের দক্ষতা এবং যোগ্যতা দিয়ে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে আসেন তিনি । ২০১৪ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে দক্ষিন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন । একটি প্রান্তিক অঞ্চলের শিশুদের আদর্শিক করে গড়ে তুলতে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অত্যান্ত মনোরম করে গড়ে তুলেছেন বিদ্যালয়টিকে । শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই বিদ্যালয়টি দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিন রাজাপুর গ্রামে । যেন একটি আদর্শ বিদ্যাপিঠ আর এই বিদ্যাপিঠের একজন সফল অভিবাবক আদর্শ শিক্ষক আলতাফ হোসেন মাষ্টার । বাংলাদেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আলতাফ হোসেন মাষ্টারের মত পাঠদান এবং দায়িত্ব পালনের ব্রত নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শিশুদের তৈরি করবে এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের । কিন্তু দুঃখের বিষয় বিদ্যালয়ে ৫ থেকে ৬ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও শিক্ষক আছে মাত্র ২ জন । একজন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন আর অন্যজন সহকারি শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন । কিন্তু মিস হয়না একটি পাঠদানও । আলতাফ হোসেন মাষ্টার এভাবেই প্রতিটি শ্রেনীতে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন । এমন পরিস্থিতিতে এই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট দুর করতে অতি দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সময়ের দাবি । সেই সাথে দীর্ঘ ১০ বছর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা আলতাফ হোসেন মাষ্টারকে ভারমুক্ত করে পূর্ণ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আনলে যোগ্যতা এবং দক্ষতার মূল্যায়ন হবে বলে মনে করেন শংশ্লিষ্টরা । বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলতাফ হোসেন মাষ্টারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন , আমি যখন উত্তর মান্দারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিলাম শিশুদের কথা ভেবে আমি ১ বছর কোন নৈমত্তিক ছুটি নেইনি । তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা নবির উদ্দিন আমাকে বিদ্যালয়য়ে এসে পুরুস্কৃত করলেন । তিনি বলেন আমার বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫ টি শূণ্য পদ রয়েছে প্রায় ১০ বছর যাবৎ খুব কষ্ট করে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি দ্রুত আমার বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া দরকার।। আমার পদন্নোতি হওয়ার কথা ছিলো আরো ৫ বছর আগে কিন্তু আমার পদন্নোতি কেন হচ্ছেনা তা আসলে জানা নেই । তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যারা পদন্নোতিতে যেতে চায়না তাদের নামও গ্রেডেশন তালিকায় থাকে অথচ আমরা যারা যোগ্য, কষ্ট করি আমাদের নাম গ্রেডেশন তালিকায় থাকেনা । সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আলতাফ হোসেন মাষ্টারের মত প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিশুদের স্মার্ট পাঠদান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মনোরম করে গড়ে তুলবে এমনটাই প্রত্যাশা বিশিষ্টজনদের ।

Please follow and like us:
error20
fb-share-icon
Tweet 20
fb-share-icon20

About Author