নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেল শিক্ষা অফিসের আয়োজনে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ক্লাস্টারের প্রায় তিনশত শিক্ষক পরিবারের অংশগ্রহনে গত শুক্রবার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ চত্তর হতে সোনারগাঁও জাদুঘর ও পানাম নগরে আনন্দ ভ্রমন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ভ্রমনে অংশগ্রহন করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফারহানা হক, মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উল্যা, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শামছুদ্দিন বাবুল, উপজেলা সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক সমিতির উপজেলা সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আবেদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই আনন্দ ভ্রমনের বিভিন্ন উপকমিটির শিক্ষকবৃন্দের একান্তিক সহযোগিতায় সফলতার সাথে সম্পন্ন হওয়া এই ভ্রমনটির জন্য শিক্ষকবৃন্দ সোশ্যাল মিডিয়ায় ও সরাসরি এইউইও এবং বিভিন্ন উপ কমিটির সদস্যবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য ও প্রাচীন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে কৌতুহলীদের মনের খোরাক মিটাতে সক্ষম এ ভ্রমন স্থানটি। সোনারগাঁ জাদুঘরে এলে প্রথমেই নজর কাড়বে শতাধিক বছরের পুরনো অট্টালিকা। এটি পুরনো বড় সর্দারবাড়ি খ্যাত। এই বাড়িটি জাদুঘরকে খুবই আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ভবনের বাহিরে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্যের দুটি ঘোড়ার ভাস্কর্য, আরো রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের তৈরি গরুর গাড়ীর ভাস্কর্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য এসব কিছু আপনাকে দিবে এক সম্মোহনী অনুভুতি।
জাদুঘরের ভিতর প্রবেশ করলে বিভিন্ন গ্যালারীতে দেখা মিলবে কাঠ খোদাই কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবনভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীন লোক জীবনের পরিবেশ, তামা কাসা পিতলের পাখা-পাটি, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন, লোকজ অলংকার, গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্য পালকি, সিন্দুক সহ প্রাণখুলে দেখতে পারেন অনেক কিছু। ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন প্রতিষ্ঠা করেন লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁ জাদুঘর)। প্রথমে এটি ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরনো বাড়ীতে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে দেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকান্ডকে তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদীন এই জাদুঘর গড়ে তোলার প্রয়াস নেন। এছাড়া জাদুঘরের ভিতরের বিশাল মাঠে যে কোনধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করার সুব্যবস্থা রয়েছে। আরো রয়েছে জামদানী শাড়ীর বিশাল সমাহার এবং হস্তশিল্পের বিভিন্ন রকমারী পন্যের সমাহার। জাদুঘর থেকে বেরিয়ে ঠিক উত্তর দিকে গেলেই দেখা যাবে ঐতিহাসিক পানাম নগরী। এখানে রয়েছে হাজার বছরের প্রাচীন স্থাপত্যকলা। রাস্তার দুপাশে ঐতিহ্যের স্বাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে শত শত বছরের পুরনো অট্টালিকা।
উপজেলা শিক্ষকদের প্রত্যাশা ভবীষ্যতে এরকম আকর্ষনীয়, মনোরম, দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থানে আনন্দ ভ্রমন আয়োজন করলে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি কর্মতৎপর জীবনের একগুয়েমি দুর হয়ে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।
More Stories
লক্ষ্মীপুরে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন
লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে শিক্ষক পরিবারের উপর হামলায় আহত ৫
স্মার্ট কর্নারের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে